• পৃথিবীর দ্বিতীয় প্রাচীনতম মসজিদ মাসজিদুল আকসা। প্রথমটি হলো কাবা।
  • মাসজিদুল আকসার ভূমিতেই অধিকাংশ আল্লাহর নবি-রাসূলেরা জন্মগ্রহণ করেছেন, আল্লাহর একত্ববাদের দাওয়াত দিয়েছেন এবং এখান থেকেই তারা শেষ বিচারের দিন পুনরুত্থিত হবেন।
  • মাসজিদুল আকসায় এমন কোনো স্থান নেই, যেখানে কোনো নবি সিজদাহ দেননি বা কোনো ফেরেশতা দাঁড়াননি।
  • মাসজিদুল আকসা এবং এর আশেপাশের ভূমিতে আল্লাহর রহমত বর্ষিত হয়।
  • মাসজিদুল আকসা নির্মাণ করেছেন আদম আলাইহিস সালাম। কেউ কেউ বলেন, তাঁর সন্তান অথবা ফেরেশতারা এটি বানিয়েছেন। আবার অনেকে বলেন ইয়াকূব আলাইহিস সালাম বানিয়েছেন।
  • মিরাজের রাতে রাসূলুল্লাহ ﷺ এখানে যাত্রাবিরতি দিয়েছিলেন। আল্লাহর সকল নবি-রাসূলেরা তাঁর ইমামতিতে এখানে সালাত আদায় করেছিলেন।
  • মাসজিদুল আকসা মুসলিমদের প্রথম কিবলা ছিল। মুসলিমরা এদিকে ফিরেই সালাত আদায় করতেন। মদীনায় হিজরত করার ১৬ মাস পর্যন্ত এমনটা ছিল।
  • নবি-রাসূলদের অনেকেই ইচ্ছা পোষণ করতেন যেন মাসজিদুল আকসায় তাঁর কবর হয়। 
  • হাদীসের আলোকে জানা যায়, তিনটি শহর বিশেষভাবে সম্মানিত—মক্কা, মদীনা ও ফিলিস্তিন বা বাইতুল মুকাদ্দাস। রাসূল ﷺ বলেছেন, ‘ইবাদতের উদ্দেশ্যে ভ্রমণ করতে চাইলে, তিনটি মসজিদেই ভ্রমণ করা যাবে—মাসজিদুল হারাম, আমার এ মসজিদ (মাসজিদে নববী) ও মাসজিদুল আকসা।
  • রাসূল ﷺ বলেন, ‘তোমরা মাসজিদুল আকসায় যাও, সেখানে গিয়ে সালাত আদায় করো। কেননা তাতে এক ওয়াক্ত সালাত আদায় করা অন্যান্য মসজিদে এক হাজার সালাত আদায়ের সওয়াব পাওয়া যায়।’ (আবু দাউদ : ৪৫৭)

রেফারেন্স এখানে

হিজরি ১৪ সালে খলীফা উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু বাইতুল মুকাদ্দাস বিজয় করেন। এখানে মসজিদে উমার নির্মাণ করেন। তখন মাসজিদুল আকসা জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হয়।

এরপর ১০৯৯ সালে খ্রিস্টান ক্রুসেডাররা জেরুজালেম দখল করে নেয়। পবিত্র আল আকসার চত্তরে ভয়াবহ  গণহত্যা চালায়। মানুষের রক্ত জমে পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত ডুবে যাবার অবস্থা হয়। জেরুজালেমের মসজিদগুলোর কোনোটিকে গির্জা, কোনোটিকে আস্তাবলে পরিণত করে।

প্রায় ৯০ বছর পর মহাবীর সালাহউদ্দীন আইয়ুবী আল আকসা পুনরুদ্ধার করেন।

১১৮৭ সালে আল আকসায় পুনরায় মুসলিমরা সালাত আদায় করার সুযোগ পায়।

১৯৪৮ সালের ১৫ মে বেলফোর ঘোষণার মাধ্যমে ফিলিস্তিনে ইসরাইল নামক অবৈধ রাষ্ট্রের জন্ম হয়। ১৯৬৭ সালের জুন মাসে প্রতারণা ও কূটচালের মাধ্যমে মিসর, সিরিয়া, জর্ডান ও ইরাক এই চারটি আরব দেশের সম্মিলিত বাহিনীকে পরাজিত করে। ইসরাইল পূর্ব আল কুদস, পশ্চিম তীর, গাযা ও গোলান মালভূমি দখল করে নেয়। বর্তমানে দখলদার ইসরাইল ঐতিহাসিক আল-আকসা মসজিদ দখল করে রেখেছে। ১৯৬৯ সালে তারা একবার আল-আকসা মসজিদে অগ্নিসংযোগও করেছিল। এখন আল আকসায় দুই রাকাত সালাত পড়তেও প্রয়োজন হয় ইহুদি সেনাদের ছাড়পত্র। মাঝে মাঝেই তারা আল আকসার মুসল্লীদের ওপর তাণ্ডব চালায়!

***

সোনালি অতীত মনে করে আল আকসার পাথুরে চত্বরের শূন্যতায় আজও কেঁদে কেঁদে ফিরে হাওয়া। জলপাইয়ের পাতা ঝরে পড়ে একটা দুটো করে। বুকভরা দীর্ঘস্বাস নিয়ে জেরুজালেমের নীল আকাশে ঘুরে বেড়ায় একটা বাজপাখি। একা একা।

সে বুঝি অপেক্ষায় আছে…

আবার কবে আসবে সালাহউদ্দীন!

[ষোলো ৬ষ্ঠ সংখ্যায় প্রকাশিত]