পাগুলো আসলো কোথা থেকে?

২০০৭ সাল। ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার সমুদ্র সৈকতে ঘুরে বেড়াচ্ছিল এক তরুণী। হঠাৎ সে একটা স্নিকার দেখতে পায়। নির্জন সমুদ্র সৈকতে এ স্নিকার কোথা থেকে আসলো? ভেসে এসেছে নাকি দূরের কোথাও থেকে? কৌতুহল দমাতে পারলো ও। স্নিকারের ভেতরে একটা মোজাও দেখতে পেল। মোজা খুলতেই হিম শতীল তীক্ষ্ণ এক চিৎকার বের হলো ওর মুখ দিয়ে।

এ দৃশ্য দেখার জন্য একেবারেই প্রস্তুত ছিল না সে।

মোজার ভেতর একটা পা!

কাটা পা।

মানুষের!

সেই সৈকতে এরপর এরকম আরও কিছু পা ভেসে আসলো! পাঁচজন পুরুষ, তিনজন নারীর পা। আরও ৩টি পায়ের মালিক নারী না পুরুষ ছিল, তা বোঝা গেল না। এগুলো আসলো কই থেকে? পায়ের মালিক কারা?

তোলপাড় পড়ে গেল চারদিকে। একের পর এক রোমহর্ষক কাহিনি ছাপা হলো পত্রিকাগুলোতে। চাপা গুঞ্জন, আতঙ্ক, ফিসফাস… জল্পনা, কল্পনা। নানা তত্ত্ব। এদেরকে কি খুন করা হয়েছে? নাকি আত্মহতা করেছে দলবেঁধে? পুলিশ ডিপার্টমেন্ট কী করে? আমাদের জীবনের নিরাপত্তা কোথায়?

ভ্যানকুভার পুলিশ ২০০৮ সালে ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে একটা পায়ের মালিককে খুঁজে বের করতে সক্ষম হলো। পুলিশ জানালো- সে লোকের আত্মহত্যা করার ঝোঁক ছিল।

আরও দুটি পায়ের মালিকের খোঁজ পাওয়া গেল। পা দুটি এক নারীর। ইনিও আত্মহত্যাপ্রবণ ছিলেন। পুলিশের এই তদন্তের ফলাফল দেখে অনেকে ধারণা করেন, নিকটবর্তী কোনো সেতু থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেছেন পায়ের মালিকেরা! কিন্তু এতগুলো মানুষ সবাই কেন একযোগে আত্মহত্যা করল? এই প্রশ্নের উত্তর নেই।

আবার কেউ কেউ মনে করেন, কোনো বিমান দুর্ঘটনার ফলে নিহত মানুষদের পা এগুলো। আবার অনেকে দাবি করেন- এ পাগুলো ছিল অন্য মহাদেশের মানুষের। ২০০৪ সালের ডিসেম্বর মাসে এশিয়ায় যে সুনামি হয়েছিল, সেসময় এ মানুষগুলো মৃত্যুবরণ করেছেন। এরপর ভাসতে ভাসতে চলে এসেছে।

বিরোধীরা প্রশ্ন করে-  কিন্তু, তাই বলে ভাসতে ভাসতে এতদূর?

ওদের জবাব দেওয়া হয়- জুতোগুলো দেখো। সবগুলো জুতো ২০০৪ সালের আগের মডেলের! সুনামিই হোক, বিমান দুর্ঘটনা হোক বা আত্মহত্যা, এই কাটা পাগুলোর মালিকেরা কীভাবে মারা গিয়েছেন, সেই রহস্যের সমাধান হয়নি এত বছরেও![২]

(চলবে ইনশাআল্লাহ)

[১] প্রথম পর্ব পড়ে নাও এখান থেকে

[২] https://tinyurl.com/mis-reference

[ষোলো ৬ষ্ঠ সংখ্যায় প্রকাশিত]