অনেক অসাধারণ, খুব সুন্দর আর পুরস্কারে ভরা আনন্দের একটা হাদীস দিই? আমাল করবে তো?

বিশ্বাস করো, হাদীসটা পড়ে জাস্ট মাথা নষ্ট হয়ে যাবে তোমার। ইচ্ছা করবে মা-বাবা-ভাই-বোন, ফ্রেন্ডস এন্ড ফ্যামিলির সব্বাইকে জানিয়ে দিই। হাদীসটা পড়ার পরে যদি হৃদয়ে একটুও অনুভব করতে পারো, তাহলে আল্লাহর দয়া, স্নেহ, মমতা অনুভব করে আরও বেশি ভালোবেসে ফেলবে উনাকে। ইচ্ছা হবে, কীভাবে উনাকে আরও বেশি খুশি করা যায়, আরও বেশি বেশি ইবাদাত করে নিজেকে পবিত্র করা যায়, কত বেশি আখিরাতের মুদ্রা জমানো যায়, আখিরাতে ধনী হওয়া যায়।

চলো, গুনে গুনে প্রতিটা স্টেপ ফলো করে আমালগুলো করবই করব, এই দৃঢ় নিয়ত নিয়ে ‘বিসমিল্লাহ’ বলে হাদীসটা মন দিয়ে পড়ি।

আউস ইবনু আউস সাকাফি রদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ কে বলতে শুনেছি:

‘জুমুআর দিন যে গোসল করল, অতঃপর আগেভাগে মাসজিদে গেল; হেঁটে চলল, বাহনে চড়ল না; ইমামের নিকটবর্তী হলো; অনর্থক কর্মে লিপ্ত না হয়ে মনোযোগসহ শ্রবণ করল; তার

প্রত্যেক কদমে লেখা হবে এক বছরের আমল। তথা এক বছরের সিয়াম ও কিয়ামের (সারারাত তাহাজ্জুদ) সাওয়াব।’[১]

অসাধারণ না?

স্টেপগুলো যেন মনে রাখো, লিখে নাও কিংবা নোট করতে পারো, আলাদাভাবে মনোযোগ দিয়ে হৃদয়ে গেঁথে নিতে পারো—সেজন্য আলাদা আলাদা লাইনে ভেঙ্গে লিখছি।

১. জুমুআর দিন গোসল করা।

২. আগে আগে ও পায়ে হেঁটে মাসজিদে যাওয়া

৩. ইমামের নিকটবর্তী বসা (শেষের কাতারে পিছিয়ে না পড়া অর্থাৎ ইমামের যত নিকটে বসা যায়)।

৪. মনযোগসহ খুতবা শ্রবণ করা এবং বেহুদা ও অনর্থক কর্মকাণ্ড ত্যাগ করার মধ্যে এসব আদব সীমাবদ্ধ, যা খুব সহজ ও খুবই সামান্য।

জেনে রাখা উচিত যে, খুতবার সময় অহেতুক নড়াচড়া করা অনর্থক কর্মের অন্তর্ভুক্ত। কিংবা পরে এসে মানুষের ঘাড় ডিঙ্গিয়ে সামনের দিকে যাওয়াও অনর্থক কর্মের অন্তর্ভুক্ত।[২]

খুতবায় এত বেশি মনযোগী হতে হবে যে, কেউ কথা বললেও ইশারায় চুপ করাতে হবে, মুখে কোনো কথা বলা যাবে না। যে বলল, ‘চুপ থাকো’, সে অনর্থক কর্ম করল; অর্থাৎ যে তার পাশের সাথি অথবা নিজের সন্তানকে বলল, ‘চুপ থাকো’, সে বেহুদা কাজ করল। খুতবার সময় যে তাসবীহ অথবা মোবাইল অথবা কোনো জিনিস দ্বারা খেলল, সেও অনর্থক কর্ম করল।

একই সাথে মনে রাখি, মাসজিদে ঢোকার পর দুই রাকাআত তাহিয়্যাতুল মাসজিদের সালাত আদায় করে বসলে তা অতি উত্তম একটি কাজ হবে।

সুতরাং, জুমুআর আদবসমূহে শিথিলতা করা একদমই ঠিক নয়। অন্যথায় আমরা এমন সব বিরাট সাওয়াব থেকে বঞ্চিত হব, পরকালে যা আমাদের নেকির পাল্লা ভারী করবে ও অনেক অনেক বছরের সাওয়াব প্রদান করবে। যদি কোনো ব্যক্তি এই শর্তগুলো পূরণ করে, তবে তার জন্য এক বছর একটানা সারারাত তাহাজ্জুদ সালাতের সাওয়াব এবং এক বছর একটানা সিয়াম পালনের সাওয়াব দেওয়া হবে (সুবহানাল্লাহ) এবং কদম যত বাড়তে থাকবে সাওয়াবও এই একই অনুপাতে বাড়তে থাকবে।

পড়লে তো! ভালোভাবে চিন্তা করে দেখো তো, এরকম স্পেশাল দিন বছরে কয়টা পাবে! তাহলে, প্রস্তুতি শুরু হয়ে যাক। আর এখন থেকে জুমুআবার আসলে তোমার-আমার খুশি আর ঠেকায় কে?

এই জুমুআ থেকে তুমি-আমি একদম সবার আগে মাসজিদে গিয়ে প্রথম কাতার টার্গেট করব, ইনশাআল্লাহ। সাথে আরও আলোকিত হওয়ার জন্য সূরা কাহফের আমল (অন্তত ১০ আয়াত হলেও) আর বেশি বেশি দরুদ তো আছেই।

১। সুনানু আবী দাঊদ, 345; তিরমিযি, 502; নাসায়ি, 1697; সহীহ ইবনু হিব্বান, 2781; মুসনাদু আহমাদ, 16173

২। সুনানু আবী দাঊদ, 1118; নাসায়ি, 1718; মুসনাদু আহমাদ, 17697; সহীহ ইবনু হিব্বান, 2790।